আবারো নি¤œাঞ্চল প্লাবিত : ভেঙ্গে গেছে শতাধিক কাঁচাঘর:স্মরনকালের বৃহত্তম বন্যা পদুয়ায়



আব্বাস হোসাইন আফতাব: দুইদিনের টানা বর্ষন, পাহাড়ী ঢল ও কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেট খুলে দেয়ায় রাঙ্গুনিয়ার নি¤œাঞ্চল আবারো প্লাবিত হয়েছে। কর্ণফুলি ও ইছামতি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অথই পানিতে আবারো ডুবে গেছে অনেক কষ্টে তৈরী করা বীজতলাগুলো। অবিরাম বর্ষনে উপজেলার পদুয়ার ৬ শতাধিক কাঁচাঘর পানিতে তলিয়ে আছে । ইতিমধ্যে দুই শতাধিক কাঁচাঘর ভেঙ্গে গেছে। দক্ষিন রাঙ্গুনিয়ার বৃহত্তম বাজার রাজার হাট পানিতে তলিয়ে আছে। এছাড়া স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ডুবে থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পুকুর ডবে ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার মাছ। গুরুত্বপূর্ন সড়ক ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় প্রতি ইউনিয়নে আভ্যন্তরীন ইট বিছানো ও কাঁচা সড়কগুলো বিধ্বস্ত হয়ে যাতায়াত অযোগ্য হয়ে পড়েছে।  দক্ষিন রাঙ্গুনিয়ার স্মরনকালের এটি বৃহত্তম বন্যা বলে জানান  স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীরা জানান, ২য় বারের মতো  প্লাবনে পৌর এলাকা ও ১৫ ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলের বাড়িঘর পানিতে ডুবে গিয়েছে।
স্থানীয় শাহাদাত হোসেন তালুকদার জানান, টানা বর্ষনে পদুয়া কলেজ, স্কুল ও ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।  শস্যভান্ডার গুমাই বিল, পদুয়া বিল, রইস্যা বিল, তালুকদার বিল, নিশ্চিন্তাপুর বিল, তৈলা ভাঙ্গা বিল, শিলক, সরফভাটা, বেতাগীসহ অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ রোপা আমন পানিতে ডুবে আছে।  উপজেলার পদুয়ার হরিহর, পৌরসভার ইছামতি, ব্রক্ষোত্তর, পদুয়া, দক্ষিন পোমরা, কানুরখীল, কুলকুরমাই , পারুয়া বসাক পাড়া, বগাবিল ,জয় নগর, দুধ পুকুরিয়া, ফলহারিয়া, বেতাগী, কোদালা, ইছামতি, ঘাটচেক, ঘাগড়া , নিশ্চিন্তাপুর এলাকার প্রায় সহ¯্রাাধিক বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে  গুমাইবিলের কৃষকরা জানিয়েছেন এভাবে আর কয়েকদিন পানি থাকলে আমন চাষাবাদ সম্ভব হবে না। কৃষকরা আশংকা করছেন বারবার প্লাবনে চাষ না হলে রাঙ্গুনিয়াবাসী তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগবে।
পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সেলিম জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত  সহ¯্রাধিক লোক পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। তাদেরকে তাৎক্ষনিকভাবে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে এলাকার শতাধিক গরু ছাগল। ভারী বর্ষনে ফজলুল হক, মো. আনোয়ার, আজম নুরসহ প্রায় ১৫ জনের শতাধিক পুকুর ডুবে কোটি কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলী শাহ জানান, প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বলা হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদার জানান, কিছু কাঁচাঘর ভেঙ্গে গেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তাৎক্ষনিক খাদ্য সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য বলেছি। ক্ষয়ক্ষতির বিষটি জেলা প্রশাসক মহোদয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানিয়েছে।
কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান জানান, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে গেট খুলে দেওয়া হয়। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই হৃদ থেকে কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। হৃদে পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট। এ উচ্চতা অতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে বাঁধ রক্ষায় অতিরিক্ত পানি স্পিলওয়ে দিয়ে ছেড়ে দিতে হয়। টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে পানি ধেয়ে আসছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে পানি বের হয়ে গেলেও উজান থেকে আসা পানির চাপ কমানো সম্ভব হচ্ছে না।

Author:

Facebook Comment