চট্টগ্রামে যমুনা টিভি’র উপস্থাপক ও রিপোর্টারের বিরুদ্ধে দুই মামল


রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি:: মিথ্যা, বানোয়াট উদ্দেশ্যমুলক ও মান হানিকার প্রতিবেদন প্রচারের দায়ে যমুনা টেলিভিশনের এক উপস্থাপক ও এক রিপোর্টারের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে চট্টগ্রাম আদালতে। মামলার আসামীরা হলেন যমুনা টেলিভিশনের ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ ডিগ্রী নামক অনুষ্ঠানের ইনভেস্টিগেশন সেল’র রিপোর্টার সাজ্জাদ পারভেজ এবং ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ ডিগ্রী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মীর আহসান। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিট্রেট কুদরত- এ- এলাহী’র আদালতে মানহানি ও তথ্য প্রযুক্তি আইনে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা দুটি দায়ের করেন যথাক্রমে সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ও রাঙ্গুনিয়ার সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদের একান্ত সহকারী এনায়েতুর রহিম এবং বেসরকারী উন্œয়ন সংস্থা সুখী বাংলা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। আদালত মামলা দুটি গ্রহন করে তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়েরকৃত মামলাটি নিয়মিত এজাহার হিসেবে গ্রহন করতে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া মানহানির মামলাটি গ্রহন করে আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
মামলার বাদি ড. হাছান মাহমুদের একান্ত সহকারী এনায়েতুর রহিম বলেন, গত ৫ জুন ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ ডিগ্রী নামক ২১ মিনিটের ওই অনুষ্ঠানে বলা হয়- রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক নির্মাণে ৩৫ কোটি টাকা জলবায়ু তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়। কাজ না করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয় হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে। বাস্তবে ওই প্রকল্পের অর্থ জলবায়ু তহবিল থেকে নয়, এসেছে রাজস্ব খাত থেকে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে একজন ভারতীয় ঠিকাদার কাজটি সম্পন্ন করেছেন। এ ছাড়া ওই প্রতিবেদনে ড. হাছান মাহমুদের স্থিরচিত্র প্রদর্শন করে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও আলোচিত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও সাংসদ ড. হাছান মাহমুদের কোনো বক্তব্য প্রচার করা হয়নি বলে জানান এনায়েতুর রহিম।
প্রতিবেদনে সুখী বাংলা ফাউন্ডেশনসহ ১০টি এনজিওর বিরুদ্ধে কাজ না করে জলবায়ু তহবিলের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া অভিযোগ করা হয়। ড. হাছান মাহমুদের একান্ত সহকারী এনায়েতুর রহিম এই প্রসঙ্গে বলেন, “যে ১০টি এনজিওর কথা বলা হয়েছে সেগুলো জলবায়ু ফান্ডের অধীনে কোনো কাজের জন্য আবেদনই করেনি। প্রতিবেদনে সাংসদের স্থিরচিত্র ব্যবহার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ করে আন্তর্জাতিকভাবে তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে।”
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন বাবুল জানান, আসামীরা উদ্দেশ্যমুলক মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে যমুনা টেলিভিশনের ‘ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ ডিগ্রী নামক অনুষ্ঠানে ‘জলবায়ু তহবিলে নয়ছয়’ শিরোনামে সম্পুর্ণ কল্পনাপ্রসূত প্রতিবেদন প্রচার করেছেন। সাবেক পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মানহানি করতেই উদ্দেশ্যমুলক এই প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছে। ফলে সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পক্ষে তার একান্ত সহকারী এনায়েতুর রহিম বাদি হয়ে আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে ৫০১ ও ৫০২ ধারায় মানহানির মামলাটি দায়ের করেছেন। এ ছাড়া বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সুখী বাংলা ফাউন্ডেশনের সাথে জলবায়ু তহবিলের কোন সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও ওই সংস্থাকে জড়িয়ে মিথ্যা বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আইনজীবি জানান, জলবায়ু তহবিলের জন্য সুখী বাংলা ফাউন্ডেশন নামের সংস্থাটি কখনো কোন আবেদনই করেনি। ফলে এই সংস্থাটি জলবায়ু তহবিলের অর্থ নয়ছয় করেছে মর্মে যমুনা টেলিভিশন যে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি ও ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইনে পৃথক মামলাটি দায়ের করেছে সুখী বাংলা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। আদালতে মামলা দায়েরকালে সিনিয়র আইনজীবিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন বাবুল, মুজিবুল হক,  ইফতেখার সাইমুল চৌধূরী, অশোক দাশ, আবদুর রশিদ, চন্দন বিশ্বাস, এম এ নাছের চৌধূরী, নিখিল কুমার নাথ, সুভাষ দে, প্রতীক কুমার দেব, ভুপাল চন্দ্র, দিদারুল আলম সরূপ পালসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবি।
এই প্রসঙ্গে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগ এর আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইনজীবি দিদারুল আলম বলেন, সত্যেকে আড়াল করে ড.হাছান মাহামুদের সুনাম নষ্ট করার জন্যই এই চক্রান্ত। যা আইনের চোখে মারাত্ন অপরাধ। তাই এইসব অপচক্রের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এই মামলার আসামীদের উপযুক্ত শাস্তীর জন্য মামলার শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।

Author:

Facebook Comment