রাঙ্গুনিয়ায় কোরবানীর ঈদকে ঘিরে কামারপল্লীতে ব্যস্ততা

জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া : আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা ‘কোরবানী ঈদকে’ সামনে রেখে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কামার পল্লীতে ব্যস্ততা বেড়েছে। কামারপাড়ায় এখন তাদের দম ফেলানোর ফুসরত নেই।
দিন-রাত অভিরাম কামাররা কিরিস, দা, দামা, চুরি, কুড়াল, বটিসহ বিভিন্ন মাংস কর্তন সামগ্রী তৈরিতে মহা ব্যস্ত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শান্তিরহাট, গোচরা চৌমুহনী, ক্ষেত্রবাজার, রোয়াজারহাট, রানিরহাট বাজার, মরিয়মনগর, চন্দ্রঘোনা, রাজারহাট, পদুয়া বাজার, মালিরহাট বাজারসহ প্রায় দুই’শতাধিক কামার কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন মাংস কর্তনের ধারালো সামগ্রী।
পুরানো সেকেলে নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো কর্তন সামগ্রী তৈরির কাজ। রোয়াজারহাট বাজারের জহুল লাল ও সুদির কর্মকার জানায়, এ পেশায় অধিক শ্রম। জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে তারা এখনও আঁকড়ে আছেন। বিভিন্ন সময় এসবের চাহিদা কম থাকলেও কোরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন মনে হওয়ায় সকলেই এখন ছুটছেন কামার পল্লীতে। আর এতেই একমাসে পেশাটি জমজমাট হয়ে উঠেছে। তারা আরো জানান, একটি কিরিস লোহা মজুরীসহ ৫’শত টাকা, দা লোহা মজুরীসহ ৩’শ টাকা, দামা লোহা মজুরীসহ ৪’শত টাকা, চুরি লোহ মজুরীসহ ২’শত টাকা, কুড়াল লোহ মজুরীসহ ২’শত টাকা, বটি লোহা মজুরীসহ ৩’শত টাকা দরে বিক্রি করছেন। আর সান দেওয়ার ক্ষেত্রে কিরিস ১০০ টাকা, দা ৫০ টাকা, দামা ৬০ টাকা, চুরি ৩০ টাকা, কুড়াল ৪০ টাকা, বটি ৫০ টাকা করে সান দিয়ে ক্রেতাদে হাতে দিচ্ছে।
কর্মকারা জানান, কোরবানির ঈদে যে বেচাকেনা হয় তা আর অন্য সময় হয়না। সারা বছর আমাদের অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। শুধুমাত্র কোরবানের ঈদ এলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তারপরও বাপ-দাদার পেশাকে আঁকড়ে ধরে কোন রকম বেঁচে আছি। তবে এ পেশাজীবীরা হাজার বছর ধরে পুরানো নিয়মে এসব সামগ্রী তৈরি আসছে। তাদের এই শিল্পে এখনো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। আর তাই কামার পল্লীতে জরাজীর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কামাররা একটু সুখের আশায় কাজ করে যাচ্ছেন অবিরত।

Author:

Facebook Comment