আমার এমন এক সময় ছিলো চিনতাম না কিছু চার দেয়ালের গন্ডির বাহির কোন পথ।


আমার এমন এক সময় ছিলো চিনতাম না কিছু চার দেয়ালের গন্ডির বাহির কোন পথ। শৈশবের বাল্য বন্ধুরাই আমার একমাত্র জীবন চলার সাথী। মায়ের মমতা বাবার স্নেহ প্রতিবেশির কোলাহল মুগ্ধ করতো আমাকে।ভার্চ্যুয়াল জগত বলতে আমি তেমন পরিচিত ছিলাম না। ২০১২ সালের কথা তথা আমি একটি হাতে ফোন পাই, সাথে একটি সিম কিন্তু বাদ যায়নি। যথাযথ ভাবে আমি তখন কোন এক বড় ভাইয়ের মুখে ইন্টারনে নামক শব্দটি সাথে পরিচিত হই। তখন থেকে আমার মনের ভিতরে নানা ধরনের প্রশ্নের দানা বাধতে শুরু করেছে, আসলে এইটা কি?

আস্তে আস্তে কোনো এক বড় ভাইয়ের সহয়তায় ফেসবুক একাউন্ট খুলে নিয়। তারপরে থেকে ফেসবুকে আমার পথ চলা শুরু। ধীরে ধীরে আমি ফেসবুকের প্রতি চরম আসক্ত হয়ে গেলাম। তখন আমার নিদ্রা, ঘুম, খেলা ধুলা সব কিছু দিন দিন ভুলতে বসলাম। যা আমার জীবনে এক ধরনের বিরুপ প্রভাব ফেলতে লাগল। তখন আমার বয়স সবে মাত্র ১৪ ছুঁই ছুঁই। যদিও আমি ইন্টারনেট চালানোর তেমন উপযোগী ছিলাম না। কিন্তু এই ফেসবুকের উপর আসক্ত হওয়ায় ছাড়তেও পারছিলাম না। আমি কখনো ঠিক মত খেতে পারতাম না, গভীর রাতে ঘুমাতে হত। এটি মহামারী রোগের মত আমার জীবনে বিরুপ প্রভাব পড়তে লাগল। কখনো ঘরের বাইরে যেতাম না, বেশিক্ষন সময় কম্পিউটার এবং মোবাইলের পিছনে ব্যয় করতাম, গেমস খেলতে খেলতে আমার সময় পেরিয়ে যেত। যার কারণে কখনো নিজের প্রতি, আস্তে আস্তে কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলতে লাগলাম। 

বেশিক্ষন কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমার চোখ দিয়ে পানি বের হতো, এবং চোখে অনেক ক্ষতির সম্মুক্ষিন হতে হয়। আর এই কারণে প্রত্যেকটি সচেতন বাবা মায়ের উচিত কম বয়সি ছেলে-মেয়েদের হাতে মোবাইল না দেওয়া। এটি হয়ত তার সময় লেখা পড়া, এমনকি কলম কালির বিদ্যা থেকে সে বঞ্চিত হতে পারে। এখন প্রত্যেকটি তরুণ-তরুণি প্রযুক্তির ব্যাবহারের প্রতি আকৃষ্ট। এতে সে বাস্তবতা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। নিজেকে হারিয়ে ফেলছে, বিভিন্ন অপরাধ/অপকর্ম ইত্যাদির দিকে।প্রত্যেকটি তরুণ-তরুণির উপর মহামারী আকারে ইন্টারনেট ঝুকছে, এতে তারা নিজের থেকে ইন্টারনেট এর উপরে বেশি প্রভাব ফেলছে। এবং টাকা পয়সার জন্যেও ঝুকছে, বিভিন্ন সাইবার অপারাধে। আমি চাই আমার মতো যাতে আর কেউ এই পথে পা না বাড়ায়।

------ রাজশাহীর বাঘা থানা চন্ডিপুর বড়ছয়ঘটি গ্রাম থেকে আবু সাইদ


Author:

Facebook Comment